কিভাবে সার্ভিসের প্রাইস বৃদ্ধি করতে হয়? – লং-টার্ম ফ্রীল্যান্সিং বিজনেস পর্ব 3

যে ফর্মুলাতে আপনিও নুন্নতম $500 সার্ভিস চার্জ করতে পারবেন আপনার ক্লায়েন্ট এর কাছে  

  • আমরা অনেকেই কয়েক বছর কাজ করার পরেও সার্ভিসের মূল্য বাড়াতে পারিনা,
  • অনেকে আবার সার্ভিস প্রাইস বাড়ালে ক্লায়েন্ট পাই নাই,
  • মনে হয় প্রাইস বাড়ানোর কারণে ক্লায়েন্ট কাজ পাচ্ছিনা আবার দেখি অন্য কম্পিটিটর ঠিকই হাই প্রাইসে সার্ভিস সেল করছেন।

আজকে আমি শেয়ার করবো কীভাবে ফাইভারের মতো হাইলি কম্পিটিটিভ মার্কেটেও আমার গিগের নুন্নতম প্যাকেজ প্রাইস $500 এবং এভারেজ $2000 করে সেল করতাম  

সার্ভিসের প্রাইস বাড়াতে কী কী লাগে? 

ইলন মাস্কেট টেসলা, বিল গেটসের মাইক্রোসফট, জ্যাক মার আলিবাবা, ফাইবার আপওয়ার্ক, নাইকি, amazon এবং দুনিয়ার সকল বিজনেসের একটি সিক্রেট বিজনেস মডেল রয়েছে যা শুধুমাত্র আপনার নেই।

আগের আর্টিকেলে আমরা জেনেছি যে একজন ফ্রিল্যান্সারের ক্লায়েন্ট পাওয়ার আগে সর্বপ্রথম কোন দুটি জিনিস সব থেকে প্রয়োজন প্রথম হচ্ছে আপনার দশ বছর পরে ফাইন্যান্সিয়াল গোল কি হবে? এবং সেই গোল অনুযায়ী একটি পারফেক্ট বিজনেস মডেল।

একটি কথা আবারও মনে করিয়ে দেই আপনার লক্ষ্য ছাড়া আপনি কখনো সাকসেস হতে পারবেন না আর সাকসেস হওয়ার জন্য প্রসেসিং যদি না থাকে অথবা প্রসেসিং জানা না থাকে তাহলে আপনি পথ হারিয়ে ফেলবেন।

আপনার ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিজনেস মডেল হচ্ছে আপনার সেই প্রসেস।

তাহলে হাই পেয়িং ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য কিভাবে আপনি বিজনেস মডেল তৈরি করবেন?

একটি বিজনেস মডেল আপনাকে সব সময় সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্যে ফোকাস থাকতে সাহায্য করবে এবং আপনার লক্ষ্যে কতটুকু প্রগ্রেস হয়েছে তা বুঝতে আপনাকে সব সময় উত্তেজিত রাখবে।

আপনার গোল হচ্ছে ক্যাটরিনা কাইফ কে বিয়ে করা কিন্তু ক্যাটরিনা কাইফকে বিয়ে করতে হলে আপনাকে সেই যোগ্যতা অর্জন করতে হবে, এমনি এমনি সে আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হবেনা, তাইনা? 

এখন বিজনেস মডেল হচ্ছে সেই গোলের একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো যা আপনাকে ক্যাটরিনা কাইফের যোগ্য হতে সাহায্য করবে। 

আপনি যদি এইরকম কাঠামো অথবা স্ট্রাকচার ঠিক মতো না জানেন তাহলে সব সময় উলট পালট কাজ করবেন যা আপনার লক্ষে পৌঁছাতে সব সময় বাধা হয়ে থাকবে। 

বিজনেস মডেল হচ্ছে আপনার সার্ভিসটি আপনি কার কাছে বিক্রি করবেন? যে আপনার সার্ভিসটি কিনে নিবে সে আপনার বিজনেসে কতটুকু কাজে আসবে? মানে আপনার আয় করা এবং সেই আয়ের উন্নতি করার একটি কাঠামো তৈরি করে দিবে।

গিগ তৈরি করে অথবা আপনার প্রোফাইল দ্বারা আপনি হয়তো বা একটি ক্লায়েন্টকে মিটিং কলে নিয়ে আসতে পারবেন কিন্তু আপনি যদি না জানেন আপনার ক্লায়েন্টের কাছে আপনি কি বিক্রি করবেন কতদিন পর্যন্ত বিক্রি করবেন এবং কতগুলো সার্ভিস বিক্রি করবেন তাহলে ক্লায়েন্ট মিটিং এ হয়তোবা একটি কাজের জন্য ক্লায়েন্টকে পটাতে পারেন কিন্তু সেই ক্লায়েন্ট আপনার সাথে কখনোই লং টাইম থাকবে না 

কারণ ফার্স্ট ইম্প্রেশন ইজ দা লাস্ট ইম্প্রেশন।

প্রথম মিটিংয়েই আপনাকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে আপনার ক্লায়েন্টের বিজনেসে আপনি কতটা প্রয়োজনীয় এবং আপনার ক্লায়েন্ট আপনার সাথে লং টার্ম রিলেশনশিপ করলে তার কি বেনিফিট হবে।

যখন প্রয়োজনীয়তা এবং বেনিফিট বুঝিয়ে ফেলবেন ঠিক তখন ক্লায়েন্ট এমনিতেই প্রয়োজন হলেই আপনাকে প্রথমে মেসেজ দিয়ে আপনার সার্ভিস নিতে চাইবে কারণ সে জানে যে তার দরকারি সবকিছুই আপনার কাছে আছে।

যাদের কাছে একই ক্লায়েন্ট বারবার ঘুরে ঘুরে আপনার কাছে আসে তারা খুব ভালো করেই জানেন যে একটি ক্লায়েন্ট কিছুদিন পর পর আপনাদেরকে নক করে কারণ কোনো না কোনোভাবে আপনি হয়তো সম্পর্ক তারা বুঝিয়েছেন আপনাকে তার প্রয়োজন আর যদি কাউকে বোঝাতে না পারেন তাহলে এখন থেকে যে কোন ক্লায়েন্টকেই এই জিনিসটা বুঝানোর প্রস্তুতি নেন।

তো মনে একটা প্রশ্ন জাগবে যে আমি কি করে বুঝবো যে আমার ক্লাইন্টের প্রয়োজনীয়তা কি এবং কিভাবে একটি ক্লায়েন্ট আমার দ্বারা বেনিফিটেড হবে?

এর জন্যই আমরা এখন বিজনেস মডেল কি জিনিস এবং কিভাবে তৈরি করব এই বিজনেস মডেল আমাদের ফ্রীল্যান্সিং ক্যারিয়ারে কীভাবে কাজে লাগবে সেটা বুঝবো।

এখন যে কাজটা করবেন সেটা হচ্ছে “Business Model Canvas” লিখে গুগলে সার্চ করবেন তখনই দেখবেন বিজনেস মডেল ক্যানভাস নামে একটি স্ট্রাকচার আসবে ওখানে কয়েকটি ভাগ আছে আমি আপনাকে এই আর্টিকেলে সবগুলো ভাগ বোঝাবো না কারণ সবগুলো ভাগ না বুঝলেও আপনি গুরুত্বপূর্ণ পার্টগুলো বুঝে গেলে বাকি পার্টগুলো এমনিতেই বুঝতে পারবেন।

Source: Strategyzer

প্রথম: Customer Segments: 

বিজনেস মডেল তৈরি করেন আর বিজনেস শুরু করেন যদি একটি এলেমেন্ট আপনার বিজনেস না থাকে আর সব কিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলেও আপনি কখনোই বিজনেস অথবা ফ্রিল্যান্সিং করে সাসটেইনেবল বিজনেসম্যান অথবা ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন না।

আর সেই ইলেমেন্ট হচ্ছে কাস্টমার সেগমেন্ট অথবা টার্গেট কাস্টমার মার্কেট।

দুনিয়ার এমন কোন বিজনেস গুরু এখনো জন্ম নেয়নি যে এই একটি এলিমেন্ট বাদ দিয়ে কাউকে বিজনেস করা শিখাতে পারে।

তাই এই একটি এলিমেন্ট যদি ঠিক না থাকে তাহলে মাথায় রাখবেন বিজনেস মডেলের অন্য কোন এলিমেন্টে কাজ করে আপনার কোন ফায়দা হবে না।

শুরুতেই আমি কতগুলো জায়ান্ট কোম্পানির উদাহরণ দিয়েছিলাম তার মধ্যে আমার সব থেকে ফেভারিট কোম্পানি হচ্ছে নাইকি। যারা জুতা বিক্রি করে এবং এরা শুধুমাত্র একটিমাত্র কাস্টমার সেগমেন্ট নিয়ে আজীবন কাজ করে যাচ্ছে।

নাইকি কোম্পানির কাস্টমার সেগমেন্ট হচ্ছে শুধুমাত্র অ্যাথলেট।

গুগলে নাইকি বিজনেস মডেল লিখে যদি সার্চ করেন তাহলেই দেখতে পাবেন।

অ্যাথলেট মানে হচ্ছে ক্রিকেটার, ফুটবলার, বাস্কেটবল প্লেয়ার আরো অনেক ধরনের খেলোয়াড়। নাইকি কখনো কর্পোরেট কাস্টমারের জন্য ফরমাল ড্রেসের জুতো অথবা সু বানায় না।

এর কারণটা কি জানেন?

নাইকি যদি দুটি কাস্টমার সেগমেন্ট সিলেক্ট করে একটা হচ্ছে অ্যাথলেট এবং আরেকটি হচ্ছে কর্পোরেট তাহলে তাকে ফরমাল ড্রেসে সু জুতো পড়ার জন্য সু ফ্যাক্টরি বানাতে হবে, নতুন এমপ্লয়ি হায়ার করতে হবে, নতুন হিউম্যান রিসোর্স অথবা ম্যানেজমেন্ট টীম তৈরি করতে হবে, নতুন ভাবে সবকিছু প্রথম থেকে শুরু করতে হবে এবং এতে করে অ্যাথলেটদের যে কোয়ালিটি তারা এখন পর্যন্ত দিতে পারছে তা হয়তো সে প্রথমেই সু কর্পোরেট কাস্টমারকে দিতে পারবে না।

তখনই নাইকি কোম্পানির বদনাম হবে এবং নাকি কোম্পানির লস মার্জিন শুরু হবে।

কিন্তু নাইকি শুধুমাত্র অ্যাথলেটদেরকেই সার্ভিস দেওয়ার কারণে তার এখন পর্যন্ত একটি ব্র্যান্ড হয়ে আছে।

নাইকির নাম বললেই আপনার মাথায় ফুটবল আর ক্রিকেটের কথাই মাথায় আসবে 

নাইকির প্রোডাক্ট একটি এবং কাস্টমার একটি তাই তাদের প্রোডাকশন টিম জানে যে প্রোডাক্টের তৈরির জন্য কি কি করতে হবে, তাদের সবকিছুই নির্ধারিত এবং কোম্পানির সবাই জানে যে এই কোম্পানির কাস্টমার কে? এবং এই কাস্টমারের জন্য তাদের কি ধরনের কোয়ালিটি মেইনটেইন করার প্রসিজার দেওয়া আছে তাই তারা কোন কথা না বলেই ওই অনুযায়ী কাজ করে। অলরেডি তাদের শকল সিস্টেম রেডি করাই আছে এখন তারা শুধু প্রোডাক্টের কুয়ালিটি ইম্প্রুভ করে মার্কেটে নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ করে। তাদের টিম ম্যানেজমেন্টে এই কারণে কোন সমস্যা হয়না। 

কিন্তু তারা যদি দুই ধরনের জুতো তৈরি করে তাহলে কখনোই নির্ধারিতভাবে একটি সুনির্দিষ্ট কোয়ালিটি মেইনটেইন করতে পারবেনা। কারণ তাদের তাহলে সিস্টেম চেঞ্জ হবে, প্রোডাক্ট চেঞ্জ হবে, কুয়ালিটি পুরো পুরি ডিফ্রেন্ট হবে এবং তাদের সিস্টেম টাও চেঞ্জ হবে এবং তাদের এমপ্লয়িরা সর্বোপরি কনফিউজ হয়ে যাবে। 

আমাদের বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের এটি হচ্ছে সর্ব বৃহৎ সমস্যা যার কারণে আমরা কোয়ালিটি কাজ ধরে রাখতে পারি না এবং আমাদের বিজনেস গ্রো করেনা।

আমি এ কথাটি বহুবার লাইফ সেশন, ভিডিও আর্টিকেলে তুলে ধরেছি এবং আবারও বলছি ফাইবারে অথবা আপওয়ার্কে অথবা যে কোন মার্কেটপ্লেসে আপনি কাজ করার কারণে হয়তো বিভিন্ন ধরনের কাস্টমার সেগমেন্টে আপনাকে সার্ভিস দিতে হয়।

আপনি হয়তো একা একেক কাস্টমারকে হ্যান্ডেল করতে পারেন অনেক কষ্ট করে কিন্তু আপনি যদি একটি টিম বা বিজনেসম্যান করতে চান তখন আপনার এক এক কাস্টমারের একেক ধরনের চাহিদা অনুযায়ী একেক ধরনের কোয়ালিটির ভিন্নতা দেখা দিবে আর আপনার টিম মেম্বাররা আপনাকে কখনোই ভালো কোয়ালিটি দিতে পারবেনা।

যারা মিড লেভেল ফ্রিল্যান্সার আছেন তারা এই ভোগান্তি টা সবসময় ভুগে থাকেন এবং তারা জানেন যে একা ওই কাজগুলো ঠিকভাবে রাখতে পারলেও টিম মেম্বারদেরকে দিয়ে কোয়ালিটি কাজ আসে না।

এর সমাধান একটি আর সেটি হচ্ছে আপনার বিজনেস মডেলের কাস্টমার সেগমেন্ট স্পেসিফিকভাবে যেকোনো একজনকে আপনার বেছে নিতে হবে।

এখন অনেক মার্কেটপ্লেস ফ্রিল্যান্সারদের মাথায় ঘুরঘুর করছে আমি যদি সব ক্লাইন্টকে বাদ দিয়ে দেই তাহলে তো আমার কাজকাম কমে যাবে।

আপনি যদি মনে করেন সামনের দশ বছরে অটোমেটিক ভাবে ১০ হাজার ডলার আয় করবেন তাহলে আজকের এই এক হাজার ডলার অথবা দুই হাজার ডলারের লোভ আপনাকে সামলাতে হবে এবং আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি মার্কেটপ্লেসের বাহিরেও প্লানিং করতে হবে।

কীভাবে আমি আমার ফাইভারের গিগের বেসিক প্যাকেজে $500 প্রাইস চার্জ করতাম? 

আমি প্রিন্স চৌধুরি গলা উচিয়ে বলতে পারি মার্কেটপ্লেস বলেন আর মার্কেটপ্লেস এর বাহিরে আমার কাস্টমার সেগমেন্ট সবসময় একটি ছিল এবং সেই একটি মাত্র কাস্টমার সেগমেন্টে শুধুমাত্র মার্কেটপ্লেসের এর ভিতরে আমি এমন ভাবে মার্কেট রিসার্চ করে গিগ তৈরি করেছি যা দ্বারা আমি ক্লায়েন্টের কাজ করে হাঁপিয়ে যেতাম এবং এর কারণে মাত্র কয়েক মাসের মাথায় টপ রেটেড ব্যাচ চলে যায়।

ফাইবার হেল্প বাংলাদেশ কমিউনিটির এডমিন প্যানেলে আসার আগে আমি টপ রেটেড হই এবং এটা আমি কাউকেই বলিনি কিন্তু যারা আমাকে এডমিন প্যানেলে নিয়ে এসেছিল তারা আমার প্রোফাইল দেখেছিল এবং তারা জানতো।

আমার অনেক বন্ধুবান্ধব এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা মাঝেমধ্যে আমার প্রোফাইল দেখতে পেলে আমাকে মেসেজ করত।

আপনি যদি একটি ভালো কাস্টমার সেগমেন্ট অথবা টার্গেট কাস্টোমার মার্কেট বের করে ভালো করে রিসার্চ করতে পারেন তাহলে দেখবেন সেই কাস্টমারগুলো মার্কেটপ্লেসের ভিতরে এবং বাহিরে সব জায়গাতেই অবস্থান করে।

আমার ২০২০ সালের পর ফাইবারের গিগে সর্বনিম্ন প্রাইস শুরু হতো ৫০০ ডলার দিয়ে এবং প্রিমিয়াম প্যাকেজ 3000 ডলার পর্যন্ত। 

যদিও বা মার্কেটপ্লেস এখন আর কাজ করা হয় না।

অনেকেই প্রশ্ন করতো কিভাবে আমি এতো প্রাইসে গিগ সেল করি? এর রহস্য কী? ট্রিক্সটা শেয়ার করিনা ক্যান 

আসলে এটা কোন ম্যাজিক না এটা হচ্ছে শুধুমাত্র আমার মার্কেট রিসার্চ এর ফল।

আমার স্পেসিফিক কাস্টমার সেগমেন্ট নিয়ে আমি এত বেশি রিচার্জ করেছিলাম যে এদের সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে রাতে ঘুমানো রাত পর্যন্ত এরা জীবনে যা করে সবকিছুই আমার মুখস্ত।

এরা গুগলে কি সার্চ করে এবং ফাইবারে কি সার্চ করে তাও আমি জানতাম এবং কত বড় ক্লায়েন্ট এবং কত ছোট ক্লায়েন্ট কিভাবে সার্চ করে আমাকে পাবে সেই প্লানিং ও আমি করেছিলাম।

যার কারণে অন্তত ৫০০ ডলারের বাজেট নিয়ে যে ক্লায়েন্ট সার্চ করে তার কিওয়ার্ডগুলো আমার জানা ছিল এবং সে কিওয়ার্ডগুলো আমি আমার গিগে বসিয়েছিলাম।

আমরা ফাইবার মার্কেটপ্লেসের ভিতরে গিয়ে রিসার্চ করে গিগ তৈরি করি আর আমি 2017 সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত একই কাস্টমার সেগমেন্টে কাজ করেছি কিন্তু আমার গিগের প্রিমিয়াম প্রাইসই ছিল মাত্র ২০০ ডলার।

কারণ আমরা সবসময় ফাইভারের ভিতরের অন্যদের গিগ দেখে দেখে রিসার্চ করি আর গিগ তৈরি করি। 

কিন্তু ভেবে দেখুন গিগ রিসার্চ কী এটাকে বলে? এইটাকে বলে প্রজেক্ট, রিসার্চ না। 

কারণ আপনি অলরেডি বানানো একটা জিনিষকে দেখেই ওই জিনিষটা বানাচ্ছেন। হয়তো উপড়ে ভিজুয়াল দেখতে ভিন্ন কিন্তু ভিতরের মাল-মশলা তো একই, তাইনা? 

তাই অন্য সেলার এমন গিগ তৈরি করে যার প্রাইস আসলে $200 এর বেশী না আর আমরা তাঁকে দেখেই ওই গিগ তৈরি করি তাহলে আমাদের প্রাইস কীভাবে বাড়বে? 

তাই ফাইবারের গিগ তৈরি আর আপওয়ার্কের প্রোফাইল তৈরি করুন যেখানেই জান আপনাকে মার্কেট সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে এবং সেই মার্কেট কোথায় কোথায় অবস্থান করে সেটা বুঝতে হবে।

আমার কাস্টমার সেগমেন্ট হচ্ছে রিয়েল এস্টেট এবং আমি এই কাস্টমার সেগমেন্টের এমন একটা নিস নিয়ে কাজ করি যা সম্পর্কে এর আগাগোড়া সবই আমি জানি।

যার কারণে আমার কিওয়ার্ডগুলো এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছিল এবং এমন সিক্রেট কিওয়ার্ড আমি ইউজ করেছি যার কারণে খুব কম ক্লায়েন্ট আমাকে সার্চ করে খুঁজে পায় কিন্তু ওই কম সংখ্যক ক্লায়েন্ট যখন আমার গিগ দেখে তখন আমার গিগ দেখে তারা বুঝতে পারে যে আমি শুধুমাত্র তাদের জন্যই সার্ভিস দিচ্ছি আর যে কারণে শুধুমাত্র ফাইবার থেকে কোনো পরিশ্রম ছাড়া অথবা মার্কেটিং ছাড়াই আমি $500 এর বেসিক প্যাকেজের ক্লায়েন্ট পেতাম। 

হয়তো কথাটা মনে হচ্ছে কমপ্লিক্টেড অথবা এইখানে ফর্মুলা কই? 

ফর্মুলা হচ্ছে আপনার তিনটি প্রশ্ন ক্লায়েন্ট সম্পর্কে জানতে হবেঃ 

  • ক্লায়েন্টের বাৎসরিক ইনকাম কত হলে সে আপনার পর্যাপ্ত প্রাইস পে করতে পারবে?
  • ওই লেভেলের ক্লায়েন্ট কি ধরনের সমস্যায় থাকে এবং তার সমস্যার সলিউশন কীভাবে দিবেন? 
  • ওই সার্ভিস দেওয়ার পর সমস্যা কাটিয়ে সে তার বিজনেসে কী রিজাল্ট ইম্প্রুভমেন্ট আনতে পারবে?  

কাস্টমারের কাছে সার্ভিস প্রাইস বৃদ্ধি করার ফর্মুলা আছে কিন্তু ওই ফর্মুলা অনুযায়ী আপনাকে প্রথমেই বলা হবে কাস্টমার সেগমেন্ট অথবা কাস্টোমার কে? এবং কে আপনাকে হাই প্রাইসে পেমেন্ট দিবে? 

তখনই আপনাকে মার্কেট রিসার্চ করতে হবে এবং বের করতে হবে কোন কাস্টমারের কাছে বাজেট আছে অথবা পে করার মতো সক্ষমতা আছে। 

রিসার্চ করা ছাড়া কোন টুলস অথবা জাদুমন্ত্র আপনাকে এইগুলো বের করে দিতে পারবেনা। অলসতা করে রিসার্চ না করলে লাভ নেই

এখন পর্যন্ত মার্কেটপ্লেসের বাহিরে সোশ্যাল মিডিয়াতে আমি শুধুমাত্র ক্লায়েন্টদেরকে একটা মেসেজ দিলেও তারা আমার মেসেজের রিপ্লাই করে কারণ আমার মেসেজটা এতটাই পার্সোনালাইজড হয় যে তারা মনে করে যে এই পাবলিক টাকে আমার দরকার আমার বিজনেস কে গ্রো করার জন্য।

অনেকেই প্রশ্ন করে ভাই বেসিক প্যাকেজে $500 চার্জ করার ট্রিক্স টা শিখান!

এর ট্রিক্স একটাই যেটা এতক্ষণ বললাম সেটা হচ্ছে আপনার টার্গেট মার্কেট নিয়ে অনেক সময় ধরে রিসার্চ করতে হবে। আমি একদিনে এইটা করিনি, আমাকেও $৫ দিয়ে শুরু করতে হয়েছিল তারপর আস্তে আস্তে বেড়েছে।

তাই হতাশ হওয়ার কিছু নেই, আপনিও রিসার্চ করে করে আস্তে আস্তে টেস্টিং এর মাধ্যমে প্রাইস বাড়াবেন 

আমি প্রচুর পরিমাণে আমার টার্গেট মার্কেট নিয়ে রিসার্চ করেছি যা আমাকে এমনকিছু ইনফরমেশন দিয়েছে যা হাই চার্জ করতে সহজ করে দিয়েছে।

আপনার ক্লায়েন্ট একজন মানুষ আর আমার ট্রিক্স দ্বারা কখনো তার পকেট থেকে টাকা খসাতে পারবেন না, একজন ক্লায়েন্টের কাছে $500 অথবা $5000 যত টাকাই চার্জ করতে চান, তার আগে আপনাকে বুঝতে হবে সে কি চায় এবং কতটাকার মূল্য কোন চাওয়ায় আছে? 

আপনি কি সার্ভিস দিচ্ছেন, আপনি কত এক্সপেরিয়েন্সড, আপনি কি কি এওয়ার্ড পেয়েছেন এইগুলা দিয়ে ক্লায়েন্ট এর কোন লাভ নেই। আপনি হতে পারেন শাহরুখ খান কিন্তু সে আপনাকে টাকা দিবে তার বেনেফিট হলে, তার ইম্প্রুভমেন্ট হলে, সে যা চাচ্ছে তা পেলে। 

তাই আপনার অভিজ্ঞতার অহংকার করে প্রাইস বৃদ্ধি করবেন না, এতে ক্লায়েন্ট এর কিছু যায় আসেনা। ক্লায়েন্ট তখনই আপনার কাছে ভিখারি এর মতো আসবে যখন তার চাওয়া পাওয়া আপনি পূরণ করতে পারবেন। 

সে কি চায় তা বের করতে পারলেই সে আপনাকে যেকোনো মূল্য দিতে রাজি থাকবে।

আপনাকেই ধরে বলি, ধরুন আপনি ফাইবারে অ্যাকাউন্ট তৈরি করলেন কিন্তু কোন কাজ পাচ্ছেন না।

এখন আপনি আমার টার্গেট কাস্টমার মার্কেট, মানে ফ্রিল্যান্সার।

তাহলে আমি সোজা ফাইবারে যাব তারপর দেখব নতুন ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট অথবা গিগ কোথায় কোথায় আছে।

তারপর সেখানে যেয়ে যদি আমি ইনবক্স করে বলি 

আপনি কি ফাইবারে এখনো ক্লায়েন্ট পাচ্ছেন না?

তাহলে এই নিন তাবিজ যেটা দ্বারা আপনি সহজে ক্লায়েন্ট পাবেন এই বলে আমি একটা লিংক দিয়ে দিলাম।”

আমি যত বড় ভন্ড, প্রতারক, ভুয়া হই না কেন আপনি ঠিকই ওই লিংকে ক্লিক করবেন।

ধরুন ইউটিউব লিংক দিলাম সেটাই ক্লিক করে আপনি দেখলেন আসলেও আমি এমন কিছু আইডিয়া আপনাকে দিয়েছি যা আপনার ক্লায়েন্ট পেতে সাহায্য করবে তাহলেই আপনি হয়ে গেলেন আমার ফ্যান।

তারপর ঠিকই আপনি আমার সার্ভিস নেক্সট কিনতে চাইবেন।

তাই দয়া করে মার্কেটপ্লেস, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কোল্ড ইমেইল মার্কেটিং, লিংকডিন এই হাবিজাবি উসকা দুসকা স্ট্রেটেজি না দেখে কাস্টমার নিয়ে রিসার্চ করেন, বের করেন আপনি আপনার সামনের ১০ বছরের ক্যারিয়ারে এক্সাক্টলি কার সাথে বিজনেস করবেন আর আপনার বিজনেসের ক্লায়েন্ট হচ্ছে আপনার ক্লায়েন্ট না, সে হচ্ছে আপনার বিজনেস পার্টনার যে আপনার রেভিনিউ জেনারেট করে দিতে সাহায্য করে।

বিয়ে করবেন বাড়ির কাজ করাবেন বলে তাহলে কখনো বউ পাবেন না, কাজের বুয়া পাবেন, যদি বিয়ে করেন একসাথে মরার আগ পর্যন্ত থাকার জন্য তাহলে হয়তো বা বউ পেতে পারেন।

বিজনেস বলেন অথবা ফ্রিল্যান্সিং দুটো করার আগে মেন্টালিটি চেঞ্জ করুন।

কনক্লুশন হচ্ছে এখন থেকে সামনের ১০ বছর পর্যন্ত একজেক্টলি কোন ইন্ডাস্ট্রির কোন নিশের টার্গেট কাস্টমার মার্কেটে আপনি কাজ করবেন সেটা বের করে ফেলুন এবং সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যান।

রিসার্চ করতে করতে দেখবেন এমন কিছু মার্কেট গ্যাপ খুঁজে পাবেন যা অন্য কেউ দিচ্ছেনা আর আপনি সহজে হাই প্রাইসে সেই সার্ভিস মার্কেটপ্লেসের ভিতরে এবং মার্কেটপ্লেসের বাহিরে দিতে পারছেন। 

নেক্সট আর্টিকেলে জানতে পারবেন যে কিভাবে একটি স্পেসিফিক কাস্টমারের জন্য পাওয়ারফুল সার্ভিস তৈরি করতে হয় এবং এর কি কি ইলিমেন্ট একটি সার্ভিসে থাকলে ক্লায়েন্ট সার্ভিস নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে যাবে ।

কমেন্ট করে আপনাদের মতামত জানাবেন এবং অবশ্যই নেক্সট আর্টিকেলে আপনাদের মতামত অনুযায়ী কনটেক্ট করার চেষ্টা করব

This Post Has 2 Comments

  1. Nowsa Tanim

    অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এতো সুন্দর করে গুছিয়ে বলার জন্য! আমি সোশ্যাল মার্কেটিং এর কাজ শিখেছি একাউন্ট গ্রো করা আর ফেসবুক এডস রান করা । ইউটুব সাবস্ক্রাইব ,, এর বেশি কিছু আমি পারিনা। দুখের বিষয় টাকা দিয়ে যা শিখলাম সেই মেন্টর যদি আপনার মতো গুছিয়ে বুঝতে পারতো। আমি একটি অভাবের সংসারের মেয়ে, বাবা মায়ের খরচ সামলাতে হিমশিম খাই, আমি কিভাবে ক্লাইন্ট পাবো কিভাবে মার্কেট রিসার্চ করবো সেটা আমাকে শিখানো হলো না, শুধু একাউন্ট গ্রো করা শিখতে হলো, একাউন্ট গ্রো তাও নাকি রবোট প্যানেল দিয়ে সার্বিস দিবো।

    আমি ফাইবার আপওয়ার্ক একাউন্ট করেছি
    গিগ দিয়েছি অর্ডার এর পাচ্ছিনা।
    ভাইয়া প্লিজ নেক্সট আর্টিকেল এর জন্য আশায় থাকবো। যদি কিছু একটা করতে পারি বাবা মায়ের জন্য।

    আবারও অনেক অনেক ধন্যবাদ
    আল্লাহ্ আপনার মংগল করুক আমিন

  2. Akid

    ভাই আমি এখনো গিগ খুলি নাই, চিন্তা করছি গিগ খুলবো তাই বসে বসে আর্টিকেল পড়ছিলাম। সত্যি ভাই
    অসাধারণ ছিল ? ।

Leave a Reply

Prince Chowdhury

Started Freelancing Career since 2012 and Converted as an Entrepreneur, Business Coach & Marketing Strategy Enthusiast
Join Our Community:

Blog category

Recent Posts